বর্তমান সময়ে নারী পুরুষ প্রায় প্রত্যেকেই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন।দূষণ, চুলের সঠিক যত্ন না নেওয়া ইত্যাদি আরও নানাবিধ কারণে চুল পড়া সমস্যার দেখা দেয়। চুল পড়া সমস্যাকে মোটেও অবেহলা করা যাবে না।চুল পড়তে পড়তে অনেকের মাথায় টাক পড়ে যায়।
কেরাটিন নামক এক ধরনের প্রোটিন দ্বারা চুল তৈরী,এতে রয়েছে ৯৭ ভাগ প্রোটিন এবং ৩ ভাগ পানি। মূলত চুল হিসেবে আমরা যা দেখতে পাই সেটি আসলে মৃত কোষ।নানা ধরনের কারণেই চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়।
প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপায়ে আমরা চুল পড়া বন্ধ করতে পারি। এগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো :
খাবার গ্রহন :
প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহন করে থাকি।খাদ্য তালিকায় বিশেষ কিছু খাবার পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে যে সব খাদ্য আমাদের শরীরের পাশাপাশি আমাদের চুলকেও ভালো রাখতে সাহায্য করবে। ডিম,কলা,বাদাম, হলুদ শাক-সবজি, পালংশাক,ছোলা,টক ফল,বিভিন্ন ধরনের বীজ,লাল মাংশ ইত্যাদি আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এসব খাবারের মধ্যে বিদ্যমান,বি ফাইভ,ওমেগা থ্রী,ফ্যাটি এসিড, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি উপাদান আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আমাদের চুল পড়া বন্ধের পাশাপাশি চুলকে ঘন, উজ্জ্বল ও লম্বা করতেও সাহায্য করে।
তেল:
তেল আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারকেল তেল এ উপস্থিত ফ্যাট আমাদের চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্যকর। কদুর তেল চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। চুলকে শক্ত ও মোটা রাখতে সাহায্য করে কদুর তেল। নিয়মিত নারকেল তেল এবং কদুর তেল ব্যবহার করলে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
ভিটামিন:
চুলের জন্য বিভিন্ন ভিটামিন প্রয়োজন। বিশেষ করে ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি আমরা সূর্যের আলো থেকে পেয়ে থাকি। সকালের মৃদু সূর্যের আলো থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি আমাদের চুলকে সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান :
অ্যালোভেরা,নিমপাতা,জমা ফুল ইত্যাদির রস আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এসব রস আমাদের চুল পড়া কমাতে এবং চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন প্যাক :
চুল পড়া কমাতে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি প্যাক ব্যবহার করতে পারি। দুধ,মধু এবং লেবুর রসের প্যাক আমাদের চুলে ভিটামিন বি এবং প্রোটিন জোগাতে সাহায্য করে। মিথির প্যাক, মিথির গুড়া রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন চুলে ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধি অনেক দ্রুত ঘটে। শ্যাম্পু ব্যবহারের আগে এসব প্যাক ব্যবহার আমাদের চুল পড়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
শুধু চুল পড়া বন্ধ করতে এসব মেনে চললেই হবে না।চুলের সঠিক যত্ন ও নিতে হবে। চুল শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ভেজা চুল শুকানোর জন্য চুলে জোরে কিছুদিনে আঘাত করা যাবে না।ভেজা চুল আচরানো যাবে না। চুল সবসময় হালকা ভাবে বাধতেঁ হবে। চুলে বিভিন্ন ধরনের ক্যামিকেল, হেয়ার ড্রায়ার, হেয়ার স্টেটনার ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও আরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে চুল শুধুমাত্র আমাদের মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না পাশাপাশি আমাদের মাথাকেও রক্ষা করে। তাই চুলের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে।