33 C
Dhaka
হোম সিরিজথ্রিলার সিরিজমতি মিয়ার ডায়রী | পর্ব ৫

মতি মিয়ার ডায়রী | পর্ব ৫

বিউটি ও সায়ন্তিকাঃ

এখন সময় রাত ৯টা। রেল স্টেশনে বসে আছি আমি আর অবন্তিকার বোন বিউটি। ৯ টা ৫০ এ উপবন এক্সপেসের অপেক্ষায় আছি।

আজ দুপুরে এলাইন লিওনার্দোর বইটা পড়তে পড়তে ঘুমালাম। ইদানিং অনেক ঘুমাচ্ছি।

বিকেলে অবন্তিকা আসার কথা ছিলো। আসেনি। ফোন করে বললো, আপনি আমাকে উদ্ধারের জন্যে গবেষণা করে, আর রুদ্রের খুনের ব্যাপারটা সমাধানের জন্যেও। আমি আগামী তিনদিন ব্যস্ত থাকবো। তিন দিন পর দেখা করবো। আর শুনুন, রুদ্রকে সন্ধ্যায় আপনার ওখানে যেতে বলেছিলেন। সে যাবে না। তিনদিন পর আমরা দুজনই আপনার সাথে দেখা করবো।

এই বলে ধপাস কিংবা টুং করে ফোনটা রেখে দিলো। আমি একটু হাফ ছেড়ে ভাবলাম যাক এবার সিলেট গিয়ে তীরন্দাজ মামার সাথে দেখা করে আসি আর ওরহান পামুকের কি বই আছে নিয়ে আসি। এই ভেবে ঘর গুছিয়ে রাখবো ভাবছিলাম।

এমন সময় দরজায় ঠকঠক। ঠিক ঠকঠক না, অনেক জোরে ঠাস ঠাস করে নক করছে কেউ।

আমি ধীরে ধীরে গিয়ে দরজা খুললাম। দরজার সামনে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বয়স খুব বেশী না। একুশ বাইশ হবে। মাথার উপর একটা সানগ্লাস তোলা, কানে ছোট্ট দুল, গলায় চিকন একটা চেইন, গায়ে শার্ট আর জিন্স প্যান্ট; পায়ে গাম বুট।

দু’পায়ের উপর ভর করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাত দুটো বুকের উপর ভাঁজ করে বললো,
— আমি সায়ন্তিকা। আপনার নাম কি? কি করেন? বাড়ি কই? বয়স কত?
— কোন সায়ন্তিকা? টিচারদের মত গড়গড় করে প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন কেন? কি চাই? কেন আসছেন?
— কোন সায়ন্তিকা আপনার জানার দরকার নাই। আপনার কাছে লাইটার আছে? সিগারেট ধরাতাম।

সায়ন্তিকার ঠোঁট দেখেই বুঝলাম সে সিগারেট খায় না। আমাকে ভড়কে দেয়ার জন্যেই সে লাইটার চাইছে। তাই আমি খুব শান্ত গলায় বললাম,
— মাফ করেন। আমার বাসায় লাইটার নাই।
— মাফ করেন মানে? আমি কি ভিখারী নাকি?
— না, আপনি ভিখারিনী।
— আপনি তো ভীষণ অভদ্র। দরজায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি। একবারের জন্যেও ভেতরে যেতে বললেন না।
— অপরিচিতদের আমি সহজে ঘরে ঢুকতে বলি না।
— তাই নাকি।

সায়ন্তিকা ঘরে ঢুকতে পা বাড়াতেই আমি বললাম,
— আপনি ঘরে ঢুকলে আমি বের হয়ে যাবো এবং আপনার বাসায় গিয়ে ঝামেলা করবো।
— আপনি আমার বাসা চেনেন?
— না।
— তাহলে?
— আপনার বাড়ি চেনা কঠিন কিছু হবে না আমার জন্যে।
— বহু বকেছেন! এবার বাসায় ঢুকতে দিন। আমি আপনার পরিচিত।
— আমি তো আপনাকে চিনি না। আপনাকে ঘরে ঢুকতে দিতে পারি এক শর্তে।
— বলুন কি শর্ত?
— আমাকে চা বানিয়ে খাওয়াতে হবে।
— এটা কোন ব্যাপার! আচ্ছা, যদি বিষ মিশিয়ে দেই?
— আপনার মতো সুন্দরীর হাতে বিষও মধু হয়ে যাবে।
— বাঁদরামো বেশী করছেন। কিচেন দেখিয়ে দিন, চা বানাবো।

সায়ন্তিকা ঘরে ঢুকছে। আমি দরজা বন্ধ করতে করতে বললাম,
— দরজা বন্ধ করে দিচ্ছি।
— আমি ভয় পাই না।
— আচ্ছা আপনি তো নিয়মিত এমন পোশাক পরেন না।
— আপনি কি ফেলুদা ফেলুদা ভাব করছেন?
— আমি ফেলুদা না। ভাবও করছি না। যা সত্যি তা বলছি।
— আপনি জানলেন কি করে?
— জানলাম না, বুঝলাম।
— তা কি করে বুঝলেন।
— আপনি শার্টের হাতা ভাঁজ করছেন, ভাঁজ খুলছেন, অস্বস্তি বোধ করছেন। প্যান্ট পরেও শান্তি পাচ্ছেন না। গাম বুট খুলেছেন হন্তদন্ত করে।
— বাব্বাহ, ভালো অবজারভ করেছেন দেখছি। আর কি কি অবজারভেশনে ধরা পড়েছে বলুন তো।
— আপনার ডান হাতের ঘড়িটা বলে দিচ্ছে যে, আপনার রুচি ভালো তবে কার্যকরীতা নিয় ভাবনা নেই।
— মানে?
— ঘড়িটা সুন্দর আপনাকে মানিয়েছেও, তবে ঘড়িটা নষ্ট। আপনি সম্ভবত চশমা পরেন, পাওয়ার বোধহয় মাইনাস।
— হ্যাঁ মাইনাস টু। কি করে বুঝলেন?
— আপনি আমার ঘরের ভেতরে দেখতে চাইছিলেন। তখন ভ্রু কুঁচকে চোখ সুক্ষ করে তাকাচ্ছিলেন। অর্থাৎ আপনি দূরের বস্তু ভালো দেখেন না। আর দূরের বস্তু না দেখা মানে চশমার পাওয়ার মাইনাস। চশমা পরেন তা বোঝাই যায়, কারণ আপনার নাকে এখনো চশমার রাবার প্যাডের ভাঁজ আছে।
— অনেক হয়েছে ব্যোমকেশ বাবু। এবার আমি চা বানাই। তারপর আপনাকে জেরা করা হবে, প্রয়োজনে শাস্তি দেয়া হবে।
— জো হুকুম মহারাণী।
— কে মহারাণী? কিসের মহারাণী? ফাইজলামী করেন?
— ক্ষেপার কোন কারণ নেই। কারণ, আমি এখনো নিজেকে মহারাজা বলিনি।
— চুপ করে সোফায় বসে থাকেন। আমি চা বানানো শেষ করে আসছি।

আমি চুপচাপ সাদা সোফায় বসলাম। মিনিট দুয়েক পর কাপ ভাঙার শব্দ শুনলাম। একটু জোরেই বললাম,
— এবার তো জেরা করবো তোমাকে, শাস্তি হবে তোমার।
“অপরিচিতদের আপনি বলে সম্বোধন করতে হয়।” বলতে বলতে দু’কাপ চা হাতে নিয়ে আসলো।
সোফায় বসতে বসতে বললো, আপনি একা থাকেন?
— না! আমার সাথে কর্ণিয়া থাকে। ও বোধহয় বারান্দায়।
— কর্ণিয়া কি হন আপনার?
— আমার বন্ধু।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে সায়ন্তিকা বললো, তা বন্ধুটি কি করে?
— কিছু না। ঘুরেফিরে ঘুমায় খায়।
— ও আচ্ছা! বেকার বন্ধু। আগে বলেননি কেন যে, উনি বাসায়। তাহলে তিন কাপ চা বানাতাম।
— ও চা খেতে চাইবে না। উল্টো খামচিও দিতে পারে।
— কি ডেঞ্জারাস মানুষ।
— কর্ণিয়া মানুষ নয়।
— মানে?
— কর্ণিয়া আমার বন্ধু, বিড়াল বন্ধু।
— আপনিও মানুষ না। ফাজিলের হাড্ডি। এতক্ষণ বললেন না কেন যে, কর্ণিয়া বিড়াল?
— আপনাকে দেখছিলাম।
— আমি কি এলিয়েন যে আমাকে দেখছেন।
— এলিয়েন দেখে আমি মুগ্ধ হইনা।
— এসব বাদ দ্যান। আমাক তুমি করে বললেন কেন তখন?
— বলতে ইচ্ছে হলো। তাছাড়া আপনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট মনে হচ্ছে।
— বয়সে ছোট হলেই তুমি বলতে হয় না, সমবয়সী হলেই তুই বলতে হয় না। সবাইকে আপনি বলতে হয়। বুঝেছো।
— এই যে, আপনি আমাকে মাত্র তুমি করে বললেন।
— প্রতিশোধ নিলাম। আপনি আমাকে একবার তুমি করে বলেছেন, আমিও একবার বলেছি। শোধ বোধ। চা কেমন হয়েছে?
— দারূণ বললে কি আরেক কাপ বানাবেন?
— বানাতাম। কিন্তু ইচ্ছে করছে না। আমার পরিচয় জানতে চাইছেন না যে?
— ইচ্ছে করছে না। চা খেতে খেতে আপনি কেন এসেছেন তা বলে পালিয়ে যান।
— আমি আমার পরিচয় দিবো না, আর আপনি আমাকে না চেনা পর্যন্ত কেন আসছি সেটাও বলবো না।
— তাহলে উঠুন।
— কোথায়? ছাদে নাকি চাঁদে।
— চা বানিয়ে খাইয়েছেন, আমিও বসতে দিয়েছি, এবার ঘর থেকে বের হন। আমি আজ সিলেট যাবো।
— সিলেট কেন?
— তীরন্দাজ মামার সাথে দেখা করতে।
কর্ণিয়াকে ঘরের এক কোনায় দেখে সায়ন্তিকা বললো,
— কুকুর বিড়াল আমার ভালো লাগে না। আপনি আজকেই কর্ণিয়াটাকে দূর করবেন। আর শুনুন আমিও যাবো সিলেটে আপনার সাথে। তা তীর ধনুক না কি বললেন মামাটা থাকে কই?
— সিলেটের কোথায় জানি না। আমি আর কর্ণিয়া যাবো, আপনি কেন যাবেন?
— আপনার সাথে ঘুরতে যাবো।
— চলুন।
— আমি বাসায় গিয়ে রেডি হয়ে আসি। গাড়ি ক’টায়?
— আসিফকে ফোন দিলে বলতে পারবো।
— এটা কে আবার?
— একজন ব্ল্যাকার। ট্রেনের টিকেটের জন্যে ফোন করবো।
— ট্রেন হলে তো ভালোই। এখনি ফোন করুন। আমি নিশ্চিত হয়ে তবেই রেডি হতে যাবো।

আমি আসিফকে ফোন করে বললাম দুইটা টিকেট রাখতে। আসিফ বললো আজ রাতে উপবন এক্সপ্রেস আছে। সে দুইটা টিকেট রেডি করে রাখবে।

সায়ন্তিকা হাসি হাসি মুখ করে বললো।
— যাক অবশেষে যাচ্ছি তাহলে। আমি বাসায় গিয়ে রেডি হয়ে আসি। আপনি রেডি হয়ে নিন।
— আপনি রেডি হয়ে বাসায় আসবেন না। পাটোয়ারীর দোকানে যাবেন। আমি ওখানেই থাকবো।
— পাটোয়ারীটা কে? তার কিসের দোকান? কোথায় দোকান?
আমি হাসতে হাসতে বললাম,
— পাটোয়ারী অস্ত্র বিশেষজ্ঞ। ওর বন্ধুকের দোকান। আমার ঘর থেকে বের হয়ে একটু সামনে গেলেই যে চায়ের দোকান ওইটার তার দোকান। ওখানেই থাকবো আমি ঠিক ৮টায়। ৯ঃ৫০ এ ট্রেন। আপনি লেট করলে আপনাকে রেখে চলে যাবো।
— আমি যথাসময়ে হাজির হয়ে যাবো মহারাজা।
— না বকে বাড়ি যা। ব্যাগ গুছিয়ে নে। বাচ্চা মেয়ে বেশী বকা ভালো না।
— আমি রেডি হয়ে আসি। তারপর বোঝাচ্ছি বাচ্চা না কি!
এই বলতে বলতে ঘর থেকে সায়ন্তিকা বেরিয়ে গেল। আমি ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। ব্যাগে একটা শার্ট, দুইটা টি শার্ট তিনটা বই, ফোনের চার্জার আর কিছু টুকিটাকি জিনিষপত্র।

তখন সময় প্রায় হয়ে এলো। সন্ধ্যে ৭ঃ৩০। ভেবেছিলাম কর্ণিয়াকে নিয়ে যাবো। কিন্তু না কর্ণিয়া যেতে চাইছে না। তাই ওকে বারান্দায় খাবার দাবার বুঝিয়ে দিয়ে পাটোয়ারীর দোকানে আসলাম।

পাটোয়ারী আমাকে দেখেই এক কাপ আদা চা বানিয়ে হাসিমুখে আমার হাতে দিয়ে গেলো। আমি আদা চা খাচ্ছি। দেখলাম একটু দূর থেকে একটা নীল গাড়ি আসছে মানে অবন্তিকার গাড়ি। অবন্তিকা এই সন্ধ্যায় কই যাচ্ছে। ভাবতে ভাবতেই গাড়িয়ে দোকানের সামনে এসে ব্রেক করলো। বুঝলাম অবন্তিকা আমাকে দেখেছে। কিন্তু না।

গাড়ির ড্রাইভিং সিট থেকে উঠে বেরোলো সায়ন্তিকা।
সায়ন্তিকা এবার শার্ট প্যান্ট পরে নাই। তার পরনে শাড়ি, রংটা অনেকটা কমলা রঙের। হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি, চুল খোলা।

পুরো ব্যাপারটা এখন আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে এলো। সায়ন্তিকা আমার সামনে এসে বললো,
— এই যে জাঁহাপনা, আপনার পাটোয়ারীকে বলুন এক কাপ আদা চা দিতে মহারাণীকে।
— পাটোয়ারী, এই ছ্যাচড়া মেয়েটাকে একটা লিকার চা দাও।
— আমি ছ্যাচড়া হলে আপনি মহাফাজিল। অভদ্র লোক।

দুজন বসে চা খাচ্ছি। নীরবতা ভেঙ্গে আমি বললাম,
— গাড়ি কি স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে যাবেন?
— হ্যাঁ। নইলে আমার লাগেজগুলো কি আপনার ঘাঁড়ে করে নিয়ে যাবো!
— কি বলছেন এসব? লাগেজগুলো মানে কয়টা লাগেজ? কেন?
— সে আপনি বুঝবেন না।
— আমরা কয়েক ঘন্টা থাকবো ওখানে বড় জোর একদিন।
— সেটা পরে দেখা যাবে।

চা শেষ করে গাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে সায়ন্তিকাকে বললাম,
— আপনারা কয় বোন?
— দুই। কেন?
— না এমনিই।
— ও আচ্ছা।

সায়ন্তিকা গাড়ি চালাচ্ছে। আমরা মেঘডুবি গ্রাম থেকে রেল স্টেশনের দিকে যাচ্ছি।

সায়ন্তিকা কোন কথা বলছে না। তাই আমি বললাম,
— বিউটি, কতদিন হলো তুমি ড্রাইভিং শিখেছ?
সাথে সাথে গাড়িটা রাস্তার পাশে ব্রেক করে বড় বড় চোখ দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— আপনি আমার এ নাম জানলেন কি করে?
— সে পরে দেখা যাবে।
— এখনই বলুন।
— নাহ! ট্রেনে বলবো।
— আচ্ছা।
— গাড়ি যে আপনি চালাচ্ছেন, তা স্টেশন থেকে গাড়ি আনবে কে?
— ওখানে ড্রাইভার আছে।

আমরা স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। আসিফকে ফোন দিলাম। সে এসে টাকা নিয়ে টিকেট দিয়ে গেলো।
আমরা প্ল্যাটফর্মে বসে আছি। আমি কোন কাজ না পেয়ে বসে বসে ডায়রী লিখছি। এখন সময় ৯ঃ৪০। ট্রেন চলে এসেছে। উপবন এক্সপ্রেস। ট্রেনে উঠতে হবে। সায়ন্তিকা মানে বিউটি তিনটা লাগেজ এনেছে। এগুলো নিয়ে আমরা ট্রেনে উঠবো এখন। সায়ন্তিকা আগেই বলে রেখেছে সে জানালার পাশের সিটে বসবে।

মতি মিয়া, ৭ অক্টোবর ২০১৯।

হাসান জামান
হাসান জামান
কলেজ জীবনে ২০০৫ সাল থেকে কবিতা আর ছোটগল্প লেখার মধ্য দিয়ে সাহিত্যে পদার্পণ তরুণ লেখক হাসান জামান-এর৷ তারপর জাতীয় দৈনিকসহ লিখেছেন অনেক লিটল ম্যাগজিন-এ৷ এক সময় সম্পাদনা করেছেন এক সময়কার জনপ্রিয় লিটল ম্যাগাজিন "অর্বাচীন" ও "শব্দঘর"৷ পেশায় সফটওয়্যার নির্মাতা ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক পরামর্শক হলেও সাহিত্যের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেননি৷ সুযোগ পেলেই সাদা জমিনে কলমের আঁচড়ে সাহিত্য রচনার চেষ্টা করেন অবিরত৷
একইমত আর্টিকেল

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন

- Advertisment -
Digital Marketer Apple Mahmud Riyad

জনপ্রিয়

মন্তব্য